মানুষের জীবনে ভালো কাজ ও ঈমান—এই দুটি বিষয় সবসময় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। অনেকেই প্রশ্ন
করেন, “একজন মানুষ যদি আল্লাহকে মানে কিন্তু ভালো কাজ না করে, আরেকজন আল্লাহকে না মানে কিন্তু মানুষের জন্য ভালো কাজ করে—তাহলে একজনের পরিণতি জান্নাত আর অন্যজনের পরিণতি জাহান্নাম কেন?” এই প্রশ্নটি শুধু কৌতূহল নয়, বরং ঈমান ও আমলের গভীর মূলনীতি বোঝার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামের দৃষ্টিতে ঈমান হলো সমস্ত কাজের ভিত্তি। যেমন একটি শক্তিশালী ফাউন্ডেশন ছাড়া কোনো ভবন টেকে না, তেমনি ঈমান ছাড়া ভালো কাজ আখিরাতে গ্রহণযোগ্য হয় না। একজন মানুষ আল্লাহকে মানে, কিন্তু তার গুনাহ আছে—সে দুনিয়ায় ও আখিরাতে শাস্তি পেতে পারে। তবুও, আল্লাহ বলেছেন যে, যার অন্তরে সামান্য ঈমান থাকবে, সে শেষ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ কারণেই ঈমানকে ইসলামে প্রধান শর্ত হিসেবে ধরা হয়েছে।
অন্যদিকে, কেউ যদি আল্লাহকে না মানে, তাওহীদ অস্বীকার করে, কিন্তু মানুষের জন্য হাজার ভালো কাজ করে—তাহলেও তার আখিরাতের পুরস্কার নেই। কারণ সে আল্লাহর সবচেয়ে বড় হক—তাওহীদ পূরণ করেনি। দুনিয়ায় অবশ্যই সে তার কাজের প্রতিদান পায়—মানুষ তাকে সম্মান করে, শান্তি দেয়, সুনাম দেয়। কিন্তু জান্নাত আল্লাহর ইবাদত ও ঈমান ছাড়া পাওয়া সম্ভব নয়।
ইসলাম শেখায়, মানুষের ভালো কাজ মূল্যবান—তবে তা আল্লাহর সন্তুষ্টিকে উদ্দেশ্য করে হতে হবে। মানুষকে সাহায্য করা, ন্যায়পরায়ণ হওয়া, দান করা—সবকিছুই ঈমানের সঙ্গে যুক্ত থাকলে আখিরাতে নেকী হিসেবে গণ্য হয়। তাই ইসলাম শুধু ঈমান বা শুধু কাজ—কোনোটাকেই একা সম্পূর্ণ মানে না। দুইটির সমন্বয়ই একজন মানুষকে সফলতার চূড়ায় পৌঁছে দেয়।
পরিশেষে, ঈমান ছাড়া ভালো কাজ দুনিয়ায় ফল দেয়, কিন্তু চিরস্থায়ী সফলতা দেয় না। আর ঈমান থাকা সত্ত্বেও গুনাহ করলে মানুষ শাস্তি পেতে পারে, তবু তার শেষ ঠিকানা জান্নাতই। তাই ঈমানকে শক্ত করা এবং ভালো কাজ বৃদ্ধি—এই দুইটিই একজন মুমিনের আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত।

Please do not enter any spam link in the comment box. ConversionConversion EmoticonEmoticon